ছন্দছাড়া কথা অকথার গদ্য

ছন্দছাড়া কথা অকথার গদ্য
_____________________________________________________________________________________________________________________
এই ব্লগে আমার যে কোন পোষ্টে সকল পাঠকের সুচিন্তিত মন্তব্য আশা করি।

শনিবার, ৪ অক্টোবর, ২০১৪

পূজো,১৪২১/২০১৪ (১)


কেউ কোনো কথা শোনেনা......... সে অন্য কথা, পরে আসছি সে কথায়। আগে বলে নি, কাল যে গানের কথা লিখেছিলাম তার পেত্থম লাইনটা বাদে পরের দুটো লাইনই ভুল লিখেছি, সুরটা একই রকম। সব গনেশে একই শুঁড়ের মতন আর ঐ অ-সুরের মতন আরকি ! বেশি মাথা ঘামিয়ে লাভ নেই, পূজাটা দুগগারই এটা বুঝেছি, তাই ঢের।
আজকে তিন বন্ধু মিলে সন্ধ্যে ব্যালা গল্প করতে করতে ফাঁকা রাস্তায় অনেক হেঁটে এলাম। এবারের পূজোয় এই পেত্থম, আর পূজোতেই এই পেত্থম হে বন্দুগন ! যাবার সময়ে সেই নাতনী, আমি বুড়ো বলে যে আমায় বিয়ে করবে না বলেছিল সে আবদার করে বিয়ের শর্ত দিয়েছে তাকে একটা বিএমডব্লু গাড়ি কিনে দিতে হবে। সঙ্গে একটা ন্যানো গাড়ি। ওর নাকি কী প্ল্যান আছে। যা হোক, ও বলল ভাড়া করা গাড়ি হলে হবে না, তালে ওর প্ল্যানটাই নাকি মাটি হয়ে যাবে। আমাকে বলল, "তুমি ন্যানোটায় ভুত হয়ে বসে থাকবে"। আরেকটু এগিয়ে দেখলাম একটা ছোট্ট বাচ্চা ছেলে মায়ের সঙ্গে এসে একটা বন্দুক কিনেছে । আমি দোকানে গিয়ে দোকানের ছোট ছেলেটার কানের কাছে মুখ নিয়ে বললাম, "আমাকে একটা বড় বন্দুক দে তো, আমি ওর সাথে খেলব"। ছোট্টটি অনেক খুঁজে আমার জন্য একটা বন্দুক দ্যাখালো। ওঈ বন্দুকটা নিয়ে ওর সাথে খেলতে হবে। একটু এই আলাপ চলল। ফেরার সময় এক নাতনী, যে একটা নির্দিষ্ট দোকানে এসে দোকানের ছেলেটাকে দিয়ে আমাকে ফোন করে, কচি গলায় বলে, দাদা তুমি কোতায়? ওর মুড ভাল নেই, ওকে একটা আইস্ক্রিম কিনে দিতেই পালিয়ে গেল। বাড়ি ফেরার পথে এক দোকানে আরেকটু বড় অচেনা একটি মেয়ে , বালিকা বলা যায়, চেয়ারে শান্ত-শিষ্ট বসে। ওর সঙ্গে আলাপ করলাম, বেশ সুন্দর মন ভাল করা মিষ্টি হাসি, মা-বাবার সঙ্গে বেরিয়েছে। পায়ে ব্যথা হয়েছে বলে বসে আছে। এগিয়ে আসতেই দেখি ঐ বয়সী তিনজন প্রায় নাচতে নাচতে চলেছে ঠাকুর দেখতে। আমি হাঁটু মুড়ে আধবসা হয়ে মুখ কাঁচুমাচু করে ওদের একজনকে বললাম,"আমার হাঁটুতে কি ব্যথা হয়েছে, ওঃ"। সে দু হাত ঘুরিয়ে বলল, "তা আমি কী করব"? এই হচ্ছে আমার অবস্থা, তবু ওদের সাথে মিশতেই ভাল লাগে, মিশিও তাই।
আমরা তিন বন্ধু ফাঁকা রাস্তায় ঘুরলাম মানে হচ্ছে গতকাল আর আজ দু'দিনই আমাদের এদিকে রাস্তাঘাট পূজোপ্যাণ্ডাল সব ফাঁকা, দোকানীরা কেউ কেউ আফসোস করছে। 'আফসোস' শব্দটার তিন রকম বানান দেখলাম, এরকম হলে আমার খুব সুবিধে হয়, কেউ ভুল ধরতে পারবে না।
যাহোক, বলছিলাম,... 'কেউ কোনো কথা শোনেনা'। ঢাকি প্রাণপণ বাজিয়ে যাচ্ছে, "যাসনে ঠাকুর/ থাকরে ঠাকুর" । হলে কী হবে , একটু আগেও বাজিয়েছিল, "ঠাকুর থাকবে কতক্ষণ / ঠাকুর যাবে বিসর্জন" । যতই হাতে পায়ে ধর, ঢাকের শব্দে, আরতির ধোঁয়ায় দুগগার পথ ভুলিয়ে দিতে চাও, দুগগা যাবেই ঠিক করেছে। চলে ওকে যেতেই হবে, নইলে কত্তা আদিবাসীদের সর্দার বলে কথা, আবার তাণ্ডব শুরু হবে.........। মর্তের তাণ্ডব থেকে মা দুগগা বা মেয়ে উমা বাঁচালেই হয়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন